গাজার বাসিন্দাদের মিসর ও জর্ডানে পাঠাতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাব কঠোরভাবে নিন্দা করেছে ফিলিস্তিন। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, এমন প্রস্তাব ‘রেড লাইন’ লঙ্ঘন করেছে।  একইসঙ্গে তারা জানিয়েছে, গাজার বাসিন্দারা তাদের ভূমি ছাড়বে না।

ট্রাম্প শনিবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘গাজা খালি’ করার সময় এসেছে এবং তিনি জর্ডান ও মিসরের নেতাদের গাজার ফিলিস্তিনিদের গ্রহণের অনুরোধ করেন, তা হয়ত অস্থায়ী বা স্থায়ীভাবে।

তবে রোববার এই প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছেন ফিলিস্তিনিরা, গাজার বাসিন্দারা দৃঢ়ভাবে জানিয়েছেন, তারা তাদের উপকূলীয় এলাকা ছেড়ে যাবেন না।

গাজার নাগরিক নাফিজ হালাওয়া আল জাজিরাকে বলেন,  ‘এটা মানুষের জন্য মেনে নেওয়া অসম্ভব। দুর্বলরা হয়তো যন্ত্রণা সহ্য করে চলে যাবে, কিন্তু আমাদের দেশের ছেড়ে যাওয়ার চিন্তা করা … এটা একেবারে অসম্ভব।’

এলহাম আল-শাবলি আরেকজন বলেন, ‘যদি আমরা চলে যেতে চাইতাম, তবে অনেক আগেই চলে যেতাম।  যে গণহত্যামূলক যুদ্ধ তারা চালাচ্ছে তা কিছুই অর্জন করবে না, আমরা থাকব, যা ঘটুক না কেন।’

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই পরিকল্পনা তাদের বারবার সতর্ক করা  ‘রেড লাইন’ লঙ্ঘন।

তারা আরও জানায়, ‘ফিলিস্তিনি জনগণ কখনোই তাদের ভূমি বা পবিত্র স্থান ছাড়বে না এবং ১৯৪৮ ও ১৯৬৭ সালের নাকবার পুনরাবৃত্তি হতে দেব না। আমাদের মানুষ অবিচল থাকবে এবং তাদের জন্মভূমি ত্যাগ করবে না।’

এছাড়া ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ট্রাম্পকে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি বজায় রাখতে, ইসরাইলি বাহিনীকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করতে এবং গাজায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে শাসনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে অনুরোধ করেছে।

অন্যদিকে গাজা শাসনকারী হামাস বলেছে, মার্কিন প্রশাসনকে এমন প্রস্তাব পরিত্যাগ করতে হবে যা ইসরাইলের চক্রান্তের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এবং ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার বিরোধী।

হামাস জানিয়েছে, তারা গাজায় ইসরাইলি যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে যে গণহত্যামূলক কাজ ও বাস্তুচ্যুতি সহ্য করেছে, তার বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।

ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ (পিআইজি), যা হামাসের সঙ্গে গাজায় ১৫ মাস ধরে লড়াই করছে, ট্রাম্পের মন্তব্যকে ‘যুদ্ধাপরাধের উৎসাহ’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আইমান সাফাদি বলেছেন, দেশটির বাস্তুচ্যুতি প্রত্যাখ্যানের অবস্থান স্থায়ী এবং অপরিবর্তনীয় এবং তারা স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতির প্রচেষ্টায় ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।

ট্রাম্পের মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের সিনিয়র রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহামকেও বিস্মিত করেছে, যিনি সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি এই ধারণাকে অধিক বাস্তবসম্মত নয় মনে করেন। তার বিশ্বাস আঞ্চলিক আরব দেশগুলো ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করবে।